অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম | নতুন পাসপোর্ট করার পদ্ধতি
অনলাইনে নিজেই নিজের ই পাসপোর্টের আবেদন করার নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ব্যাংক ড্রাফট বা পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা নিয়ে এই লিখাটি সাজানো হয়েছে। আমি আমার নিজের ই-পাসপোর্ট এর জন্য যেভাবে আবেদন করেছিলাম এবং মাত্র ১৫ দিনে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত ধাপগুলো এই পোস্টার মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চলেছি।
দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করা যায় না এমন একটি ভুল ধারণা আমাদের অনেকের মাঝেই কাজ করে। আপনার কাছে যদি একটি স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার থাকে তাহলে নিজে নিজেই অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩
ই পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন করার জন্য Bangladesh e-Passport Application Portal ওয়েবসাইট ভিজিট করুন- www.epassport.gov.bd এবং মেনু থেকে “Apply Online” অপশনটি বাছাই করে, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং থানা নির্বাচন করুন। একটি সচল ইমেইল এড্রেস এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সহ পিতা-মাতা তথ্য ও জরুরী যোগাযোগের ঠিকানা পূরণ করতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ এবং ডেলিভারি ধরন নিশ্চিত করে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন করার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সম্পর্কে জেনেছি, এখন আমরা জানবো কিভাবে ধাপে ধাপে এই আবেদন সম্পন্ন করতে হয়।
ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
ই পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন করার জন্য কোন কাগজপত্র আপলোড করতে হয় না তবে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করতে কিছু কাগজপত্র চেয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মূল জাতীয় পরিচয় পত্র, ই পাসপোর্ট আবেদনের অনলাইন কপি, নাগরিক সনদ।
উপরোক্ত উল্লেখিত কাগজপত্র ছাড়াও আরো কিছু কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে সাথে করে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। ই পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিচে তালিকা আকারে প্রকাশ করা হলো-
- জাতীয় পরিচয়পত্র / অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
- আবেদন সামারী (Application Summery)
- ই পাসপোর্ট আবেদন কপি
- ইউটিলিটি বিলের কপি (গ্যাস/বিদ্যুৎ)
- পিতা-মাতার NID কার্ডের কপি (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
- নাগরিক সনদ / চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট
- পেশাজীবী প্রমাণপত্র
নতুন পাসপোর্ট এর আবেদন করতে যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয় আশাকরি তা আপনার কাছে রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এখন আমরা ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য প্রস্তুত।
ই পাসপোর্ট ফি
পাসপোর্টের পৃষ্ঠার সংখ্যা, পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং ডেলিভারির ধরন অনুসারে ই পাসপোর্ট ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়। ই পাসপোর্ট এর ধরনের উপর ভিত্তি করে সর্বনিম্ন ৪০২৫ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৩৮০০ টাকার মধ্যে ই পাসপোট ফি ধার্য করা হয়েছে।
উপরে উল্লেখিত ই-পাসপোর্ট সরকারি ফি ব্যতীত পাসপোর্ট অফিসে অতিরিক্ত আর কোন ফি নেই। তবে নিজে আবেদন করতে না পারলে কম্পিউটার দোকান থেকে বা অন্য কোথাও থেকে আবেদন করিয়ে নিতে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দিতে হয়।
ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট রেগুলার ডেলিভারিতে পেতে ৪০২৫টাকা, এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৬৩২৫ টাকা ও সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারিতে ৮৬২৫ টাকার প্রয়োজন হয়। এরকমভাবে পাসপোর্ট এর পৃষ্ঠা সংখ্যা ডেলিভারির সময় এবং পাসপোর্ট এর মেয়াদের উপর ভিত্তি করে ই পাসপোর্ট ফি ভিন্ন হয়। কোন ধরনের ই-পাসপোর্ট ফি কত সেটি জানুন এখানে।
ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম
ই পাসপোর্ট আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণ করার জন্য ভিজিট করুন https://www.epassport.gov.bd/landing এরপর “Apply Online
” মেনু থেকে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং পুলিশ স্টেশন নির্বাচন করে, আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেস, ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা ও পিতা মাতার তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করুন। পাসপোর্টের মেয়াদ, পৃষ্ঠা সংখ্যা ও ডেলিভারি ধরন বাছাই করে আবেদন সম্পন্ন করুন এবং ই পাসপোর্ট আবেদন কপি প্রিন্ট করুন।
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু রয়েছে। তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনার নিজ জেলায় ই পাসপোর্ট সেবা চালু হয়েছে কিনা সেটি জেনে আবেদন ফরম পূরণ করবেন।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার বিষয়টি সহজ করার লক্ষে আবেদন প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে বিভক্ত করা হয়েছে। ধাপগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা এবং নিজে নিজে অনলাইনে পাসপোর্ট করার আবেদন করতে সক্ষম হবেন।
#১.ভিজিট করুন e-Passport Portal ওয়েবসাইট
আবেদনের শুরুতেই আমাদের Bangladesh e-Passport Portal এ প্রবেশ করতে হবে। উপরের দেওয়া লিঙ্কটি অনুসরণ করলে নিচের ছবির মত একটি অয়েব সাইটে নিয়ে যাবে, যেটি পাসপোর্ট সেবা
প্রদানকারী সরকারি সাইট।ই পাসপোর্ট ওয়েবসাইট
সাইটটিতে প্রবেশ করার পর, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন কাজ শুরু করার জন্য মেইন মেনু থেকে Apply Online অপশনটি ক্লিক করতে হবে। তারপর অন্য একটি পেজ ওপেন হবে যেখানে পাসপোর্ট অফিসের নাম এবং পুলিশ স্টেশনের নাম বাছাই করতে বলা হবে।
#২.আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও থানা নির্বাচন
যেহেতু আমরা বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চলেছি সেজন্য Are you applying from Bangladesh? এর স্থলে “Yes” নির্বাচন করবো। আপনি যদি বাংলাদেশের বাইরে অর্থাৎ বিদেশ থেকে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে “No” সিলেক্ট করবেন।
এখন আপনাকে আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নাম এবং নিজ থানার নাম বাছাই করতে হবে। আপনার ঠিকানা অনুসারে যেই আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ই-পাসপোর্ট প্রদান করে থাকে সেটি বাছাই করুন।আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও থানা নির্বাচন
পাসপোর্ট অফিস নির্বাচন করা হয়ে গেলে এর পরবর্তী ঘরে পুলিশ স্টেশনের নাম অর্থাৎ থানার নাম নির্বাচন করে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বা ভেরিফিকেশন কার্যক্রম থানায় সংঘটিত হবে।
#৩.ইমেইল ভেরিফিকেশন
পাসপোর্ট অফিসে ঠিকানা এবং থানা নির্বাচন করার পরবর্তী ধাপে আপনাকে একটি সক্রিয় ইমেইল অ্যাড্রেস দিতে বলা হবে। আপনি সচরাচর ব্যবহার করেন এমন একটি মেইল এড্রেস ইনপুট করবেন। আপনার ই-মেইল এড্রেসটি সঠিকভাবে ইনপুট হয়ে গেলে I’m human ঘরে টিক মার্ক দিয়ে সিকিউরিটি ক্যাপচা ভেরিফাই করতে হবে।ইমেইল ভেরিফিকেশন
#৪.ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি
ইমেইল এড্রেস ইনপুট করার পরবর্তী ধাপে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট পোর্টাল ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে। আপনার নাম জাতীয় পরিচয়পত্রে যেভাবে আছে সেভাবে ইনপুট করতে হবে তারপর আপনার মোবাইল নম্বর ইনপুট করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
পাসপোর্ট সার্ভার থেকে ইমেইল ভেরিফাই করার জন্য একটি ভেরিফিকেশন লিংক আপনার ইমেইলে পাঠানো হবে। সচরাচর ইমেইলটি ইনবক্স এর মধ্যেই চলে আসে। আপনি যদি ভেরিফিকেশন মেইলটি ইনবক্সে দেখতে না পান সে ক্ষেত্রে স্পনসর অথবা স্প্যাম ফোল্ডারে চেক করতে পারেন।
#৫.পাসপোর্ট এর ধরন বাছাই
Passport Type এর ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত দুই ধরণের পাসপোর্ট দেখতে পাই। একটি হলো অর্ডিনারি টাইপ পাসপোর্ট এবং অন্যটি হচ্ছে অফিসিয়াল টাইপ পাসপোর্ট।পাসপোর্টের ধরন বাছাইচ
সাধারণ নাগরিক হিসেবে অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে আমাদেরকে অর্ডিনারি টাইপ বাছাই করতে হবে।
- Ordinary Passport
- Official Passport
#৬.ই পাসপোর্ট ফরমে ব্যক্তিগত তথ্য ইনপুট
নতুন পাসপোর্ট আবেদন করার মূল কাজ শুরু হয় এখান থেকে। এ পর্যায়ে আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নিজের নাম, লিঙ্গ, পেশা, ধর্ম, দেশের নাম, জন্মস্থল(জেলার নাম) এবং জন্মতারিখ (dd-mm-yyyy) দিয়ে ১ম ফরমটি পুড়ন করতে হবে।বেক্তিগত তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ
এই ফর্মটির প্রথমেই যদি টিক চিহ্ন করে দেয়া হয় তাহলে আবেদনকারীর নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে। ব্যক্তিগত তথ্য ইনপুট ফরমের সবচেয়ে নিচের দিকে নাগরিকত্বের সূত্র জানতে চাওয়া হবে। আমরা যেহেতু জন্মগতভাবে বাংলাদেশের নাগরিক, সে ক্ষেত্রে “BY BIRTH” অপশনটি নির্বাচন করে দেবো। এই ধাপটি সম্পন্ন হলে “Save and continue” বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে চলে যেতে হবে।
#৭.ঠিকানা নির্বাচন ও ই পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বা ভেরিফিকেশনের জন্য ব্যক্তির বর্তমান ঠিকানা সঠিক ভাবে ইনপুট করতে হয়। জাতীয় পরিচয় পত্রের পেছনের অংশে থাকা ঠিকানা অনুসারে ঠিকানার তথ্য পূরণ করা উচিত।
ঠিকানা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিচের পয়েন্ট গুলো খেয়াল রাখবেনঃ-
- জেলার নাম
- থানার নাম
- গ্রামের নাম
- রোড নাম্বার
- পোস্ট অফিস
- পোস্ট কোড
প্রত্যেকটি তথ্য যচাই বাছাই করে সঠিক ভাবে দেয়ার চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে ঠিকানার বিষয়টি একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। কেননা আপনার দেয়া এই ঠিকানায় পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আপনার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা একই হলে “Present Address same as Permanent” এটি নির্বাচন করে দিলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় একই ঠিকানা বসে যাবে।
বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হলে আপনার ঠিকানা আলাদা ভাবে ইনপুট করে দিতে হবে। ঠিকানা দুটি ভিন্ন হলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বা থানা ভেরিফিকেশন উভয় ঠিকানায় হবে।
#৮.ID documents
এই ধাপে আপনার আগের কোন পাসপোর্ট ছিল কিনা এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে। আপনার আগে যদি কোন MRP Passport বা ই পাসপোর্ট থেকে থাকে তা হলে সেটি নির্বাচন করে দিতে হবে। আর যদি একেবারে নতুন পাসপোর্ট আবেদন হয় তা হলে “No, I don’t have any previous passport” এটি সিলেক্ট করতে হবে। যাদের হাতের লিখা পাসপোর্ট ছিলো তারাও এটি নির্বাচন করবেন।
আপনার যদি অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট থেকে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনার ঐ পাসপোর্ট সম্পর্কে তথ্য দিয়ে হবে। ধরে নিলাম আপনার অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট নেই। তাই উপরে দেখান ছবির মত অন্য দেশের পাসপোর্ট সম্পর্কে জানতে চাওয়ার ঘরে “No, I don’t have” নির্বাচন করবেন।
ID Documents এর সর্বশেষ ঘরে বেক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ইনপুট করতে হবে। আবেদনকারীর বয়স ২০ বছরের কম হলে NID card অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ব্যাবহার করতে পারবে। তথ্য প্রদান হয়ে গেলে সেইভ বাটনে চেপে পরবর্তী ধাপে জেতে হবে।
#৯.Parental information
এখন আপনাকে আপনার পিতা মাতার তথ্য প্রদান করতে বলা হবে। ই পাসপোর্টের Parental information স্থলে পিতা-মাতার নাম, তাদের পেশা, তাদের জাতীয়তা ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার দিয়ে ফরমটি পূরণ করতে হয়।
বাবা-মায়ের যে সকল তথ্য অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করতে প্রয়োজন তা লিস্ট আকারে উপস্থাপন করা হল
- পিতার নাম (same as NID card)
- পেশা
- পিতার জাতীয়তা ও
- NID Card Number
- মাতার নাম (same as NID card)
- পেশা
- মাতার জাতীয়তা ও
- NID Card Number
#১০.বৈবাহিক অবস্থা
আবেদনকারীর বৈবাহিক অবস্থা অনুসারে বিবাহিত না অবিবাহিত এই তথ্য জানাতে চাওয়া হবে। এই পর্যায়ে আপনি Marital Status বাছাই করার জন্য একটি ড্রপ-ডাউন মেনু পাবেন। ড্রপ-ডাউন অপশন গুলো থেকে আপনার জন্য যেটি প্রযোজ্য তা বাছাই করুন।
বৈবাহিক আবস্থার ঘরে SINGLE, MARRIED, DIVORCED,WIDOWER or WIDOW এই অপশন গুলো থাকে। এখান থেকে আপনার অবস্থা অনুসারে একটি অপশন বাসাই করুন।
#১১.Emergency Contact
জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য একজনের তথ্য দিতে হবে। পরিবারের সদস্য যেমন বাবা, মা কিংবা ভাইয়ের ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে যার সাথে যোগাযোগ করবে, তার ঠিকানা জাতীয় পরিচয়পত্রে যে ভাবে আছে সে ভাবে দেয়া ভালো।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর ক্ষেত্রে Emergency contact নাম্বারে যোগাযোগ করা হয়। তা ছাড়া কোন কারণে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে বার্থ হলে এই ঠিকানা বা মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করা হবে।
#১২.পাসপোর্টের ধরন
Passport Option বা পাসপোর্টের ধরনে আপনি আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা ও মেয়াদ বাছাই করতে পারেন। আপনার বিদেশ ভ্রমণ ও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠা আনুসারে ৪৮ পৃষ্ঠা কিংবা ৬৪ পৃষ্ঠার যে কোন একটি বাছাই করুন। আপনি যদি খুব বেশি ট্রাভেল করে থাকেন থাহলে ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট নিতে পারেন। অন্যথা ৪৮ পৃষ্ঠাই যথেষ্ট।পাসপোর্টের ধরন বাছাই
পৃষ্ঠা সংখ্যা নির্ধারণ হয়ে গেলে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ সিলেক্ট করতে হবে। ৫ বছর কিংবা ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করা যায়। আপনার কাজের উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট এর মেয়াদ নির্বাচন করুন। মনে রাকবেন পৃষ্ঠা সংখ্যা ও মেয়াদের উপর ই পাসপোর্ট ফি নির্ধারিত হবে।
#১৩.ডেলিভারির ধরন
পাসপোর্ট ডেলিভারি ৩ ধরনের হয়ে থাকে রেগুলার, এক্সপ্রেস এবং সুপার এক্সপ্রেস। জরুরি বা ইমেরজেন্সি পাসপোর্ট করতে Express Delivery বা Super Express বাছাই করতে পারেন।
Regular Delivery
রেগুলার ডেলিভারিতে পাসপোর্ট হাতে পেতে সাধারণত ১৫ দিন থেক ২০ দিন সময় লাগে। অন্যান্য বিষয় যেমন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ঠিক থাকলে ১৫ দিনের মধ্যেই ই-পাসপোর্ট হাতে চলে আসে।
Express Delivery
যারা জরুরি কাজে বিদেশ যাবে, আল্প সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পেতে হবে, তাদের জন্য এক্সপ্রেস ডেলিভারি অপশন। সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই Express Delivery তে পাসপোর্ট পাওয়া যায়।
Super Express
এটি অনলাইনে করা যায় না। সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি পাওয়ার জন্য পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে হয়। তার সাথে সাথে Pre-Police verification এর প্রয়োজন হয়। এতে ৭ দিনের ও কম সময়ে পাসপোর্ট বের হয়ে যায়।note:
ডেলিভারির ধরনের উপর পাসপোর্ট ফি কম বেশি হয়ে থাকে।
#১৪.ই-পাসপোর্ট ফি প্রদান
আবেদন সাবমিট করার আগে আবেদন সামারি থেক আপনার তথ্য গুলো পুনরায় যাচাই করে নিন। সবকিছু ঠিক থাকলে পাসপোর্ট ফি প্রদান করার পেজে চলে আসবেন। বর্তমানে ই পাসপোর্ট ফি ২ ভাবে প্রদান করা যায়।
- Online Payment
- Offline Payment
ই পাসপোর্ট অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে ফি প্রদান করার জন্য যেকোন মোবাইল ব্যাংকিং, ই-ওয়ালেট, ইন্টারনেট ব্যাংকিং অথবা কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। অনলিনে ফি প্রদানের ক্ষেত্রে আল্প কিছু চার্জ প্রযোজ্য হয়। অনলাইন পেমেন্ট শেষে পেমেন্ট স্লিপ প্রিন্ট করে নিতে হবে।অনলাইন ই পাসপোর্ট ফি প্রদান
অফলাইনে পেমেন্ট করার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট ফি জমা নেয় এমন ব্যাংক গিয়ে ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে। ব্যাংক ড্রাফট করার জন্য আপনার আপ্লিকেশন সামারি সাথে করে নিয়ে জেতে হবে। অফলাইনে পাসপোর্ট ফি জমা দিয়ে আতরিক্ত কোন টাকা দিতে হয় না। সোনালী ব্যাংক, NTRC ব্যাংক সহ আরো কিছু ব্যাংক ই পাসপোর্ট ফি জমা নেয়।
#১৫.আবেদন কপি ও অ্যাপ্লিকেশন সামারি প্রিন্ট
পাসপোর্টের আবেদনটি সঠিকভাবে সাবমিট হয়ে গেলে আপনি আবেদনের কপি এবং Application summery প্রিন্ট অথবা pdf আকারে সংগ্রহ করতে হবে।পাসপোর্ট আবেদন কপি ও অ্যাপ্লিকেশন সামারি প্রিন্ট
অনলাইন আবেদন এবং পাসপোর্ট ফি প্রদান হয়ে গেলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র link সাথে নিয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট আফিসে যেতে হবে। পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করে আপনার বায়মেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করবে। তারপর আপনাকে পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ দেয়া হবে। এই ডেলিভারি স্লিপ পরবর্তী সময়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে কাজে লাগবে।
#১৬.ই পাসপোর্ট সংগ্রহ
এখন শুধু অপেক্ষার পালা। পুলিশ ভেরিফিকেশন বা ক্লিয়ারেন্সের জন্য আপনাকে থানায় ডাকা হতে পারে অথবা পুলিশ সদস্য আপনার এলাকায় যেতে পারে। পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে আপনার মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দেয়া হবে।
ই পাসপোর্ট হয়ে গেলে আপনাকে আবার পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে, ডেলিভারি টোকেন দেখিয়ে আপনার পাসপোর্টটি সংগ্রহ করতে হবে।
ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
পাসপোর্ট পোর্টালের হোম পেজ থেকে ‘CHECK STATUS” টেবে যেতে হবে। তারপর Online Registration ID (OID) অথবা Application ID ও জন্ম তারিখ দিয়ে পাসপোর্টের বর্তমান স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।ই পাসপোর্ট চেক করার উপায়
পাসপোর্ট তৈরি হয়ে গেলে তার আপডেট স্ট্যাটাস এখানে জানতে পারবে। পাসপোর্টের আবেদন কি আবস্তায় রয়েছে সে বিষয়েও ধারনা পাওয়া যায়।
ই পাসপোর্ট সম্পর্কিত FAQ
জরুরি ই পাসপোর্ট করতে কত দিন লাগে?
জরুরী বা দ্রুত পাসপোর্ট করার জন্য Express Delivery ধরন বাছাই করতে হয়। Express ডেলিভারিতে পাসপোর্ট হাতে পেতে সময় লাগে ৭ দিন।
MRP to E Passport করবো কি করে?
আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (MRP) থেকে ই-পাসপোর্ট করার জন্য নতুন পাসপোর্টের মতই আবেদন করতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে ভিন্নতা হলো ID Documents এর স্থলে আপনার MRP পাসপোর্টের তথ্য দিতে হবে।
পাসপোর্ট আবেদনে ভুল হলে করনীয় কি?
পাসপোর্টের ফি প্রদান করার আগ পর্যন্ত ই পাসপোর্ট আবেদন সংশোধন করা যায়। চাইলে আবেদন বাতিল করে আবার নতুন করে আবেদন করা যাবে। তবে অনলাইন পেমেন্ট করা হয়ে গেলে সেটি বাতিল করে আবার করার ক্ষেত্রে টাকা ফেরতের সুযোগ নেই।
আমার ঠিকানা আর আমার পিতা-মাতার ঠিকানা সম্পূর্ণ বিপরীত হয়ে আছে। মানে আম্মু আব্বুর বর্তমান ঠিকানা যেটা সেটা আমার স্থায়ী ঠিকানা, আর আম্মু-আব্বুর স্থায়ী ঠিকানা আমার বর্তমান ঠিকানা হয়ে গেছে। এই মূহুর্তে ঠিকানা পরিবর্তনের কার্যক্রম বন্ধ, যা নির্বাচন পর্যন্ত চালু হবে না। এই অবস্থায় কি আমি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবো? পুলিশ ভেরিফিকেশনে কোন সমস্যা হবে কি??
আর একটা প্রশ্ন হলো, পাসপোর্টে পেশা স্টুডেন্ট দিলে সেটা কি আবার পরিবর্তন করা যাবে??
বিবাহিত মহিলার পাসপোর্ট করার জন্যে কাবিননামা কি জরুরী? নাকি স্বাভাবিকভাবে আবেদন করা যাবে?
সব বোঝার পরেও একটা জিনিস কারো কাছে পরিস্কার করে বোঝতে পারিনি, তা হলো – ব্যাংকে পেমেন্ট করার পর যে কাগজ টা দেওয়া হয়েছে, তা আবেদন ফরমে কোন পদ্ধতিতে লিখতে হবে?
ভাই এটা ফর্মে লিখতে হবে না। ব্যাংকের চালান ফরম আপনার আবেদনের সকল ডকুমেন্টের সাথে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিবেন।
You should take part in a contest for one of the best blogs on the web. I will recommend this site!
It’s exhausting to find knowledgeable individuals on this matter, but you sound like you already know what you’re talking about! Thanks